বলা হয় দিল্লীর লোকজনের মন ভালো হয়। আর লাকী তথা লক্ষণ লাল আগরলালের মধ্যে এই সমস্ত গুণ ছিলো। তার মুখ দেখেই লোকে বলতো, তুই দিল্লি থেকে নাকি? লাকী এমনিতে দেখতে সুন্দর। কিন্তু পকেট গড়ের মাঠ হওয়ার দরুন সে খুবই সাধারণ ভাবে থাকতো। সাধারণ শার্ট ও সাধারণ প্যান্ট।
তার বয়সী ছেলেরা রাতের সরকে বাইক নিয়ে দৌড়ায়, সেখানে লাকী তথা লক্ষণ লাল আগরলাল কেবল কলেজ থেকে বাড়ি আর বাড়ি থেকে কলেজ আর গার্লফ্রেন্ড ডিম্পলের সাথে কিছুটা সময় কাটানো। আবার তারপারে কলেজ থেকে দোকান আর যদি কোনো হোম ডেলিভারি থাকে, তো সেখান থেকে সেই লোকেশনে। তারপর বাড়ি ফিরে আসতো।
আর এরই সাথে, যদি কখনো সে কাউকে বাইকে করে ঘুরতে দেখলে, মনে মনে বলতো, “একদিন, একদিন আমারও সময় আসবে! যেদিন আমি চশমা পড়ে বাইক চালাবো। আর পিছনে ডিম্পলকে বসাবো। ডিম্পল সেদিন আমার কাঁধে হাত রাখবে আর আমি সেদিন ইন্ডিয়া গেটের আশেপাশে ঘুরে বেড়াবো। সেদিন সমগ্র দিল্লিবাসী আামদের দেখে জ্বলবে। সেদিন দোকানের কোনো বার্লনই কাজে আসবে না।”
এই ভাবতে ভাবতেই হাতে থাকা বার্লনের টিউব চেপে ধরে। আর টিউব চাপ লাগতেই সমস্ত ক্রিম বাইরে বেড়িয়ে আসে।
“আর গাধা কি করছিস? এটা কি স্পঞ্জ, নাকি চাপ দিচ্ছিস?” দোকানের মালিক তার উপর রেগে গিয়ে বলে এবং তার মাথায় একটা বারি দিয়ে দেয়।
“স্যরি স্যার। স্যরি।” লাকি মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে।
সে একটি ছোটো মেডিসিনের দোকানের কাজ করতো। সেই দোকানের নাম ছিলো চবন মেডিকেল স্টোর। আর মালিকের নাম ছিলো চবন লাল। লাকি গত পাঁচ বছর ধরে এই দোকানে কাজ করে আসছে।
এই ছোট্ট দোকানে কাজ করা তার প্রয়োজন ছিলো। পকেট গড়ের মাঠ হওয়ায় তাকে কাজ করে পয়সা জোগাড় করে কলেজে পড়তে হতো।
সে বহু জায়গায় ভালো কাজের জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু পায়নি। তাই সে ওই মেডিকেল স্টোরেই আটকা পড়ে যায়।
“শালা কুত্তা! এর টাকা কি তোর বাপ দেবে? কাটবো! এর টাকাও তোর স্যালারি থেকেই কাটবো। আর MRP এর থেকে ডবল টাকা কাটবো।” চবন রেগে গিয়ে বলে। রাগের কারণে তার মুখ চোখ ফুলে যায়।
আসিফার সাথে পার্কে ভ্রমণ - A trip to the park with Asifa
আর লাকী ঘাবড়ে গিয়ে বলে, ”MRP থেকে ডবল কেন স্যার?”
“:কারণ এর পর থেকে এই রকম কাজ করার আগে দুবার ভাববি।” চবন রেগে যায় এবং ওই টিউব ছিনিয়ে নেয়। তার মন তো চাইছিলো, লাকির মাথায় আর একবার বারি মারে। কিন্তু তার আগেই দোকানের ফোন বেজে ওঠে।
ফোনের ঘন্টা বাজতেই লাকির ওখান থেকে বেড়িয়ে আসার সুযোগ চলে আসে।
আর দৌড়ে ফোন ধরতে চলে যায়।
“হ্যালো। আমি চবন মেডিকেল স্টোর থেকে বলছি। আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?”
লাকি ফোন ধরেই কাস্টোমারকে বলা শুরু করলো।
যেখান থেকেই ফোন আসুক না কেন, লাকিকে এই কথাগুলো বলতেই হতো। কারণ, এটি ছিলো লাকির পেটেন্ট লাইন।
যেই মুহুর্তে লাকির কথা শেষ হলো, ফোনের ওপার থেকে ভেসে এলো, “আমি পবিন হোটেল থেকে 322 নং রুম থেকে বলছি। ছোটো কয়েকটা অর্ডার আছে। নোট করো। আর তাড়াতাড়ি হোটেলে ডেলিভারি করো।” একটি পুরুষের শব্দ এলো। কণ্ঠে একটি গাম্ভিয্য বোধ প্রকাশ পাচ্ছিলো।
যখনই ওর শব্দ শুনতে পেলো, লাকির কেমন যেন চেনা চেনা লাগলো। লাকি আর কিছু না ভেবে বললো, “হ্যা স্যার বলুন, আপনি কি অর্ডার করতে চান?”
অনিশার সাথে বাইক রাইডিং || Bike riding with Anisha
ফোনের ওপার থেকে পুরুষ কণ্ঠটি বললো, “হ্যাঁ অর্ডার লেখ। দুই প্যাকেট হার্ট প্লে এবং এক প্যাকেট টিস্যু। হার্ট প্লে নাম শুনতেই লাকি চমকে ওঠে। কারণ, হার্ট প্লে হলো একটি কন্টোমের প্যাকেট। তাই সেই নাম শুনতেই লাকি লজ্জায় পড়ে যায়। এতদিন ধরে মেডিকেল স্টোরে কাজ করা সত্ত্বেও এই সমস্ত নাম শুনলে লাকি লজ্জা পেতো।
“হ্যালো, লিখেছো কি লেখোনি?” ফোনের ওপারে থেকে পুরুষ কণ্ঠটি বলে ওঠে।
“হ্যা স্যার। লিখেছি।” লাকি হাসতে হাসতে বললো।
“লেখা হয়ে গেছে যখন তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।” কথা শুনে মনে হচ্ছিলো, ওই ব্যক্তি বড়ো কোনো লোক।
“হ্যা স্যার। আমি তো যাবো। কিন্তু বাইরে তো বৃষ্টি পড়ছে।” লাকি দেখলো, বাইরে জোড়ে বৃষ্টি পড়ছে। তার সাথে জোড় হাওয়াও বইছে। যার জন্য চমন মেডিকেল স্টোরের বোর্ডও নিচে পড়ে গিয়েছে। লাকির মনে হয়েছিলো, এত জোড় বৃষ্টিতে সে বাইরে বেড়োতে পারবে না।
তাই সে ফোনে বললো, “অর্ডার তো নিয়ে আসবো, তবে সামান্য সময় লাগবে। কারণ, বৃষ্টি…” এর আগে কিছু বলতে যাবে, তার আগেই ওপার থেকে ওই পুরুষ কণ্ঠটি বলে উঠলো, “তুমি কি জানো মনহোত্রার ছেলেকে বারণ করছো? আমি জানি বৃষ্টি হচ্ছে। তাই সমস্ত মাল ভালো করে প্যাকিং করে নিয়ে আসবে। আর দেরী হলে চলবে না। ঠিক আছে?” ওই ব্যক্তি রাগান্বিত অবস্থায় বললো।
এরপরে লাকি আরো কিছু বলতে যাবে, ফোন কেটে যায়।
ওদিকে দোকানের মালিক লাকির দিকে বড়ো বড়ো চোখ করে তাকিয়ে ছিলো। লাকির হাতে পেন ও খাতা দেখেই বুঝতে পেরে যায়, লাকির কাছে কোনো অর্ডার ছিলো।
সেদিন সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ার দরুণ একটা দুটো কাস্টোমারই সারাদিনে এসেছিলো। তাই দোকানের মালিক একটাও অর্ডার নষ্ট করতে চাইছিলো না। তাই সে লাকির দিকে তাকিয়ে থাকে। আর লাকি বৃষ্টির দিকে।
“বৃষ্টির বাহানা দিলে চলবে না। যেতে হবে।” চবনলাল বলে।
“আমি তো যাবো। কিন্তু বৃষ্টি একটু থামলেই চলে যাবো। আপনি নিজেই বলুন, কত জোড়ে বৃষ্টি পড়ছে। জানি না কোনো এক মিঃ মনহোত্রার ছেলে খুব তাড়াহুড়োয় ছিলো। আমি তো সাইকেল নিয়ে এত দূর তাড়াতাড়ি যেতে পারবো না।” লাকি মালিকের দিকে তাকিয়ে বলে।
কি বললি! মিঃ মনহোত্রার ছেলে? তুই আমার দোকান বন্ধ করবি নাকি? এখুনি বেড়ো অর্ডার নিয়ে। ও আমাদের অনেক পুরনো কাস্টোমার। চবন বলে।
“কিন্তু “ লাকির কথা শেষ হতে না হতেই চবন বলে “কিন্তু ফিন্ত জানি না..তুই আমার মোটর সাইকেল নিয়ে যা।”
“আরে স্যার মোটর সাইকেলে গেলে মাত্র 40 টাকা লাভ হবে। কারণ, পুরো খরচা তো পেট্রোলেই চলে যাবে। আবার গাড়ি রাস্তায় বন্ধ হয়ে গেলে একস্ট্রা খরচা। লাকি বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করলো। সে জানতো, তার মালিক এই সমস্ত কোথায় গুরুত্ব দেবে না।
চবনলাল বলে, কোনো ব্যাপার না, তুই যা। যাই হয়ে যাক না কেন, কাস্টোমার যেন রেগে না যায়। আর তাছাড়াও ও মনহোত্রার ছেলে।” চবনলাল লাকির দিকে চাবি ছুঁড়ে বলে।
লাকির মোটর সাইকেলের চাবি দেখে মনে মনে খুব খুশি হয়। আর মনে মনে বলে, আজ বাইক চালানো যাবে। আবার অপরদিকে কষ্টও পেলো এই কারণে যে, বাইক যাও বা পাওয়া গেলো, এই জোড় বৃষ্টির দিনে। যদি খারাপও হয়ে যায়, তাহলে তার খরচাও লাকির উপরে গিয়ে পড়বে।
অসন্তুষ্ট হয়ে হেলমেট ও রেনকোট পড়ে বেড়িয়ে পড়ে। বাইরে বেড়িয়ে বাইক দেখে মনে মনে বললো, “চলো যা হওয়ার দেখা যাবে। বাইক চালানোর সুযোগ তো পাওয়া গেলো।ঃ
আসলে লাকি এতদিন ধরে কাজ করার পরও নিজের জন্য এখনো পর্যন্ত বাইক কিনে উঠতে পারেনি।
লাকির ইনকামই এত কম যে, ঘর ভাড়া, তার সাইকেল, ইলেকট্রিক বিল ও জলের বিল, আর ডিম্পলের সাথে মাসে এক দুবার রেসটুরেন্টের খরচা বের করাই মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়।
লাকির বারবার ডিম্পলের কথাই মনে পড়ে যায়। “লাকি তুই যদি দুই মাসের মধ্যে বাইক না কিনেছিস না, আমি ব্রেক আপ করে দেবো দেখিস।”
লাকির জীবনে ডিম্পলই কেবল ছিলো, যার জন্য লাকি বেঁচে থাকার আশা দেখতো। ডিম্পলের বাইকে ওঠার খুব শখ। বাইকের কথা উঠলেই লাকি হেসে উড়িয়ে দিতো। কারন, সে জানতো, ডিম্পল তাকে খুব ভালোবাসতো। আর ওকে কখনো ছেড়ে যাবে না।
লাকির ডিম্পলকে খুব পছন্দ। ডিম্পলের জন্য লাকি সব কিছু করতে পারে। লাকির স্বপ্ন ছিলো, বাইকের পিছনে ডিম্পলকে বসাবে কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। কারণ, তার ইনকামই এত কম।
তবে আজকে সুযোগ ছিলো। ডিম্পলকে নিয়ে রাজপথ ঘুরে বেড়াতে পারে। কারণ, আজ তার বাইক আছে। চবনলালকে আগে থেকেই বাহানা দিয়ে রেখেছিলো। তাড়াতাড়ি ডেলিভারি করে এসে ডিম্পলের সাথে বাইকে করে ঘুরে বেড়াবে।
লাকি হোটেলে পৌঁছে যায় এবং হোটেলের এক পাশে বাইক রেখে হোটেলের ভিতর ঢুকে পড়ে।
জামাইবাবুর সাথে জীবন কাটাতে হবে প্রিয়াঙ্কাকে? Will Priyanka have to spend her life with her husband?
লাকি রিসেপশনে পৌঁছে রিসেপশনিস্টকে জিজ্ঞেস করে, “আমি চবন মেডিকেল স্টোর থেকে এসেছি। 303 নং অর্ডার ছিলো স্যার।”
রিসেপশনে থাকা ব্যক্তি হাতে থাকা প্যাকেট দেখে বুঝে যায় ওতে কি ছিলো। সাথে সাথে লাকিকে বললো, “3rd floor এ চলে যাও। লিফ্ট দিয়ে যেতে পারো।”
ওই ব্যক্তি যেভাবে বললো, লাকিও তাই করলো। লিফ্টে করে লাকি 3rd floor এ চলে যায়। সে রুম নং 303 এর কাছে চলে আসে এবং ডোর বেল বাজালো। সাথে সাথে দরজা খুলতেই প্যাকেট বাড়িয়ে দিয়ে বললো, “নমষ্কার আমি চবন মেডিকেল স্টোর থেকে এসেছি আর আমি…” এর আগে লাকি কিছু বলতে যাবো, তার চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায়।
সামনে এমন জিনিস দেখে ফেলে, যা দেখে তার মনে যেন এক বজ্রাঘাত পড়ে গেলো। তার সামনে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।
তার সামনে আর কেউ নয়, তার গার্লফ্রেন্ড ডিম্পলই ছিলো।
সে একটি পার্পেল কালারের নাইট গাউন পড়ে ছিলো। ভেজা চুল তার খোলা ছিলো। তার শরীর থেকে নির্গত সুগন্ধতেই মনে হচ্ছিলো, সে স্নান করেই এসেছে।
“ডিম্পল, তুমি এখানে কি করছো?” লাকি যেন নিজের চোখে বিশ্বাসই করতে পারছে না। সে দুবার চোখ রগরালো, তারপরও সে দেখলো, তার সামনে ডিম্পলই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
“তুমি কি আমার পিছন পিছন এসেছো লাকি?” ডিম্পল উল্টে রাগান্বিত হয়ে বললো।
লাকিকে দেখে তার হৃদস্পন্দন যেন আরো বেড়ে গেলো। সে ভাবতে পারেনি যে, লাকি এখানে চলে আসবে।
লাকি তো না সকাল থেকে কোনো ফোন করেছে, না তো মেসেজের রিপ্লাই দিয়েছে। লাকি তো ঠিক করেই রেখেছিলো, পরের দিন দেখা করে বলে দেবে, তার শরীর ভালো ছিলো না।
“ডিম্পল কি হলো? কার সাথে কথা বলছো?” হঠাৎ করেই এক যুবক দরজার সামনে এসে হাজির হলো। সে কেবল একটি হাফ প্যান্ট পড়েছিলো।
“শালা রাহুলের বাচ্চা! তোর সাহস কি করে হয় আমার ডিম্পলের গায়ে হাত লাগানোর?” লাকি যখনই রাহুলের মুখ দেখলো, তখন যেন তার রাগ চরম সীমায় পৌঁছে যায়। তার মনে হচ্ছিলো, এখুনি রাহুলকে মেরে তার দাঁত মুখ ভেঙে দেবে।
লাকি যে কলেজে পড়তো, রাহুল ও ডিম্পলও ওই কলেজেই পড়তো। আর ওই কলেজ রাহুলের বাবারই ছিলো।
ডিম্পল প্রথম থেকেই রাহুলের বাবার কোম্পানীতে জয়েন করার চেষ্টা করতো। যার জন্য রাহুল এই বিষয়ে সুযোগের সৎ ব্যবহার করতো।
লাকি ডিম্পলকে রাহুলের থেকে দূরে থাকার জন্য বহুবার বলেছে। কিন্তু ডিম্পল বারবার এই বলে কথা ঘুরিয়েছে যে, তারা কেবলই বন্ধু।
আজ আরো কিছু ঘটার আগেই ডিম্পল বললো, “দাঁড়াও।” আর লাকির বুকে হাত দিয়ে তাকে থামিয়ে দিলো।
লাকি দ্রুত শ্বাস নিচ্ছিলো। কিছুক্ষণ পর, তার রাগ কিছুটা কমে গেলো। আর ডিম্পলের কাছেও লুকানোর মতো কিছু ছিলো না। তাই লাকিকে বললো, “লাকি, আজ থেকে তোমার সাতে আমার ব্রেক আপ।”
“ব্রেক আপ!” লাকির পায়ের তলা থেকে যেন মাটি সরে যায়। তার চোখ যেন ছলছল করতে লাগলো। লাকির তার কথা বিশ্বাস হচ্ছিলো না। সে ডিম্পলের দিকে তাকিয়ে বললো, “আমরা গত একবছর ধরে আমরা এক সাথে ছিলাম। আর তুমি আমার সাথে ব্রেক আপ করতে চাও? আরে আমি তো তোমার জন্য নতুন বাইক নিতে চেয়েছিলাম “
“আরে বাদ দে! আজই মনে পড়লো বাইকের কথা! আমাকে তো বাইরে খাওয়া দাওয়ানো, ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার তো টাকা নেই। তুই আবার কোথা থেকে নিবি বাইক? আর যদি নিয়েও নিস, তাহলে পেট্রোলই কোথা থেকে ঢালবি? তোর আট হাজার টাকার চাকরি। ওতে হবে সবকিছু? লোকে হাসে আমাকে দেখে, যখন তোর সাথে ঘুরি। আমি এই রকম জীবন কাটাতে চাই না লাকি। আমি তোর মতো গরীব থাকতে চাই না। তুই আমাকে ফাঁসিয়েছিস। আমাকে তুই বোকা বানিয়েছিলি। তাই আমি রাহুলের সাথে প্যাচ আপ করে নিয়েছি। আজ থেকে এই আমার বয়ফ্রেন্ড।” ডিম্পল রেগে গিয়ে বললো।
“আচ্ছা। এই হলো তোমার এক্স-বয়ফ্রেন্ড!” রাহুল মজার ছলে জিজ্ঞেস করে এবং ডিম্পলের কাঁধে হাত রাখে। এরপর লাকির থেকে প্যাকেট নেয় এবং তার থেকে হার্ট প্লে বের করে লাকিকে দেখিয়ে দেখিয়ে তা নিয়ে নাচাতে লাগলো।
“এর থেকে হতভাগা কে হতে পারে?” রাহুল মজা করতে করতে বলতে লাগলো।
লাকির কাছে বলার মতো আর কিছু ছিলো না। সে রাগান্বিত হয়ে ডিম্পলের দিকে তাকায় এবং নিজের হাত মুঠো করে নেয়। এবং সেখান থেকে সে বেড়িয়ে আসে।
“আরে পয়সা তো নিয়ে যা। সব কি ফ্রি তে দিয়ে যাবি নাকি!” রাহুল জোড়ে জোড়ে হাসতে বলতে লাগলো। কিন্তু লাকি কোনো কথা না শুনেই বেড়িয়ে গেলো।
তার মাথায় ডিম্পলের সমস্ত কথা গুণগুণ করতে লাগলো। সে কখনো স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি, ডিম্পল কখনো তার সাতে এই রকম করতে পারে। যার জন্য সে এত কিছু করতে চেয়েছিলো, সে তাকে কোনো দামই দিলো না।
লাকি এত হতাশ হয়ে পড়ে যে, সে কাঁদতে থাকে। এবার সে লিফ্ট থেকে নয় সিড়ি দিয়ে নামতে লাগলো। এক এক সিঁড়িতে তার চোখের জল যেন পড়তে লাগলো।
যখন তার নামার শব্দ লোকে শুনতে পেলো এবং তার দিকে তাকাতে গেলো, সাথে সাথে সে চোখের জল মোছে এবং দৌড়ে বাইরে বেড়িয়ে আসে।
জীবনে প্রথমবার লাকির সাথে এই রকম ঘটনা ঘটেছে।
টাকার অভাবের দরুণ শুধু ভালোবাসা নয়, তার জীবনটাই যেন অন্ধকার হয়ে গেলো।
লাকি যখন বাইরে এলো, তখন দেখলো, বাইরে অন্ধকার নেমে গিয়েছে। আকাশে জোড় বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে।
ভাগ্নীর প্রতি আমার দায়বদ্ধতা - পর্ব -1 || I visited my sister's home - Part 1
তা দেখে লাকির চোখে আবার জল নেমে এলো। তার মন পুরোপুরি ভেঙে যায়।
আর একদিকে সে খুশিও হলো যে, আজ ডিম্পলের আসল চেহারা প্রকাশ্যে এলো। সে তো তার সাথে সংসার করার কথা ভাবছিলো। একদিকে ভালো হলো, সংসার ভাঙার আগেই সে চলে গিয়েছে। লাকির তো কষ্ট হচ্ছিলো খুবই। আর একদিকে সে মনকে শান্তনা দিয়ে বললো, আজকের এই কষ্ট ভবিষ্যতে খুশি দিতে চলেছে।
কিন্তু একটা জিনিস ছিলো, যা লাকিকে অশান্ত করাছিলো। তা হলো অভাব। তার পকেটের অবস্থা এমনই খারাপ যে, তাকে ছেঁড়া প্যান্ট পড়েই ঘুরে বেড়াতে হয়। কখনো কখনো তো শুকনো রুটি খেয়েই পেট ভরাতে হতো। সে তো কবে থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছে, একটা ভালো চাকরি জোটানোর। কিন্তু কেউ তাকে কাজ দিচ্ছিলো না। সে নিজেকে শান্তনা দিয়ে বললো, ডিম্পলের প্রতি যে খরচা হতো, তা বেচে গেলে হয়তো তার জীবন কিছুটা সুখে পরিপূর্ণ হতে পারে। কিন্তু রাতারাতি সে বড়োলোক হতে পারতো না। সে উপরের দিকে তাকালো এবং জোড়ে চিৎকার করে বললো, “এতই যদি আনলাকি করতে হতো, তাহলে নাম লাকি কেন দিলে ভগবান?” সে যত পারে, তত জোড়ে চিৎকার করলো। তার আওয়াজ শুনে আশেপাশের লোকজন তো কিছুক্ষণের জন্য চমকে ওঠে। লাকি উপরেই তাকিয়ে থাকলো, আর চোখের জল বৃষ্টির জলের সাথে মিশে যায়।
যখন সে কাঁদতে কাঁদতে ভেঙে পড়লো, ঠিক তখনই ফোনে একটা মেসেজ এলো। লাকি ফোন বের করে সেই মেসেজ পড়তে শুরু করলো। যা দেখে, এক নিমেষে তার কষ্ট দূরে চলে যায় এবং আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। তার চোখের জল নিমিষে উড়ে দিয়ে হাসিতে বদলে যায়। এবং সে রাস্তাতেই নাচতে শুরু করে দিলো। ওই মেসেজে লেখা ছিলো,
“পরিবারের রিসার্চ ও নির্ণয়ের হিসবে আগরওয়াল পরিবারের উত্তরাধিকার লক্ষ্মণলাল আগরওয়াল ওরফে লাকি, দারিদ্রের পরীক্ষা পাশ করে গিয়েছে। আর আজ থেকে জমি ও সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবে, যা তার পরিবারে লিখে দিয়েছে।”
দীঘায় ঘুরতে যাওয়া দুই বান্ধবীর গল্প - পর্ব 1 || At Digha with two friends - Part 1
এটা কি ধরনের মেসেজ? আসলে কে ছিলো লাকি? কি ছিলো তার আসল পরিচয়? আর কি করেই বা রাতারাতি আনলাকি থেকে লাকি হয়ে গেলো? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে ওয়েবসাইটটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন।
insta millionaire,the insta millionaire,insta millionaire english,insta millionaire download,insta millionaire download free insta millionaire for free, insta millionaire free, insta millionaire free download, insta millionaire free online, insta millionaire torrent,download insta millionaire,

0 Comments