“আমি তো ওদের রেখে দিয়ে দরজা বাইরে থেকে আবজে দিয়ে চলে এলাম। এর পরের ঘটনায় পূজার কথায় যা বুঝলাম, তা হলো অনেকটা এই রকম -
আমি যেহেতু দরজা আবজে দিয়ে চলে আসি আর পূজা ও অনন্যা ওই অবস্থায় শুয়েছিলো। যে কারণে, যে কেউ চাইলে ঘরে ঢুকে যেতে পারতো। সেটা আমার সেই মূহুর্তে আমার বোঝা উচিত ছিলো। কিন্তু প্রকৃতির নির্মম পরিহাস! প্রকৃতির নিয়মে হয়তো আমার মাথা সেই সময় কাজ করেনি। যার জন্য এই ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়েছিলো তাদের।
দীঘায় ঘুরতে যাওয়া দুই বান্ধবীর গল্প - পর্ব 1 || With Two Friends At Digha - Part 1
আমাদের হোটেল বুক করা ছিলো পরের দিন সকাল দশ’টা পর্যন্ত। আর আমি 9.30 নাগাড় বেড়িয়ে পড়েছি।
দশটা নাগাদ হোটেল স্টাফ আমাদের রুমে নক করতে এসেছিলো, ঘর খালি করার জন্য। কিন্ত হোটেল স্টাফ দেখলো, দরজা খোলাই রয়েছে। তাই সে ভাবলো, ঘর ছেড়ে সবাই বোধ হয় চলে গেছে। কিন্তু বিনা এন্ট্রিতে তো ঘর ছাড়া যায় না। তাই তার মনে হলো, এই ঘরে তিনজন ছিলো, তার মধ্যে আমি চলে এসেছি, তাই এই ঘরে থাকার কথা দু’জন। তাই সে চেক করার জন্য ঘরে ঢুকলো। ঘরে ঢুকেই সে দেখে যে, দুটো মেয়ে আপত্তিকর অবস্থায় শুয়ে রয়েছে। ঘুমন্ত অবস্থায় থাকার কারণে তাদের ভিডিও করে হোটেল স্টাফ এবং ক্ষাণিকক্ষণ পর তাদের ডেকে তোলে।
তারা হোটেল স্টাফের উপর রেগে যায় এবং পুলিশের ভয় দেখালে, সে জানায়, সে নাকি ভিডিও করেছে। তার নামে কেশ করলে, উল্টে হোটেল মালিক তাদের নামে কেশ করে দেবে যে তারা এখানে আপত্তিজনক কাজ করার জন্য এসেছে। এতে হোটেলের বদনাম ঘটছে। হোটেলের পলিসি অনুযায়ী, এই রকম কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে পঞ্চাশ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। কিন্তু তাদের কাছে অত টাকা তো নেই।
তাই হোটেল স্টাফ একটা অফার দেয়। জরিমানার বদলে একটি দাবি করে, যা মানলে এর থেকে খুব সহজে নিস্তার পাওয়া যাবে। সেই দাবিটি জানতে চাইলে, স্টাফ তাদের থেকে সুখ পেতে চায়। যা শুনে অনন্যা আর পূজার কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় এবং তারা কাঁদতে থাকে। কিন্তু কোনো লাভ হলো না। বারংবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শুনলো না হোটেল স্টাফ।
দুজনেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে থেকে চেষ্টা করলো নিজেদের সম্মান রক্ষা করতে। কিন্তু হায়! সুযোগের সৎ ব্যবহার করেই ফেললো ওই স্টাফ।
বহুক্ষণ ধরে ধস্তাধস্তি হওয়ার পর, হার মানলো দুজনে এবং স্টাফের কথা শুনতে বাধ্য হয়।
স্টাফ দুজনের সাথে আনন্দ উপভোগ করার মূহুর্তে হঠাৎ চলে আসে হোটেলের মালিক।
বহুক্ষণ ধরে হোটেলের স্টাফকে আসতে না দেখে নিজেই চলে এলেন স্টাফকে খুঁজতে। ঘরে ঢুকতেই যে এই রকম পরিস্থিতির সম্মুখে পড়তে হবে, তা তিনি বুঝতেই পারেননি। হোটেল মালিককে দেখে ভদ্র সভ্য বলেই মনে হলো। কিন্তু এই রকম সুযোগ পেলে কেউ কি হাতছাড়া করে!
স্টাফও মালিককে দেখে ভয়ে থতমত খেয়ে যায়। মালিক প্রথমে চুপ থাকলেও, দুজন নারীকে ওই অবস্থায় দেখে, তারও ইচ্ছা হলো, আনন্দ উপভোগ করতে।
শেষমেষ, অনন্যা ও পূজা নিজেরাই ধর্ষণের শিকার হলো।
হয়তো এটাই কর্মের ফল। ওরা যেমন আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও এই ধরনের ব্যবহার করেছিলো, সেখানেও তাদের সাথে একই ঘটনা ঘটলো।
তারা দুজনেই নাকি, পরের দিন সকালে থানায় ডায়েরি করে এসেছে। মালিক ও স্টাফ দুজনেই জেলের হাওয়া খাচ্ছে।
কিন্তু আসল বিষয়টি হলো, কর্মের ফল সকলকেই ভুগতে হয়।
আমার সাথে করা অন্যায়ের ফল ভোগ করলো পূজা আর অনন্যা। আবার ওদের সাথে যে অন্যায় হয়েছে, তার ফল ভোগ করছে হোটেল মালিক ও স্টাফ।
সুতরাং, সকলের উচিত সঠিক পথে চলা এবং সুযোগের সৎ ব্যবহার না করা। কারণ, সে হয়তো আজকের দিনে সুযোগের সৎব্যবহার করতে পারে। কিন্তু কে বলতে পারে, সে নিজেই সৎব্যবহারে শিকার হয়ে যাবে!”
এখানেই শেষ হয় দ্বিতীয় পর্ব।
দীঘায় ঘুরতে যাওয়া দুই বান্ধবীর গল্প - পর্ব 1 || With Two Friends At Digha - Part 1
ধর্ষক যেই হোক, পুরুষ হোক বা মহিলা। দোষী সবাই!
এই বিষয়ে আপনার কি মত, কমেন্ট বক্সে লিখে জানান।

1 Comments