নমষ্কার বন্ধুরা, আমি পুষ্পা। আমার জীবনের কিছু ঘটে যাওয়া সত্য ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। হয়তো অনেকে এটিকে মনগড়া কাহিনী বলে মনে করবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এই ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা, এটি কোন কাহিনী নয়। আমি নিজে একজন সায়েন্সের স্টুডেন্ট হয়েও এই সমস্ত ভৌতিক বিষয়কে প্রাধান্য দিচ্ছি। যাই হোক, বিশ্বাস করা বা না করাটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত বিষয়। চলুন আর কথা না বাড়িয়ে, ঘটনাটা শুরু করা যাক।
এই ঘটনাটি যে আমার সাথে সম্পূর্ণরূপে ঘটেছে তা কিন্তু একেবারেই নয়। ঘটনা ঘটে আমার দাদা বৌদির সাথে। এরমধ্যে আমি কি করে যুক্ত হলাম? তা পুরো ঘটনাটি জানার পর আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন।
দাদা আর্মিতে চাকরি করে, থাকে ব্যাঙ্গালোরে। দাদা ব্যাঙ্গালোরে থাকে বলে, যখন তখন আমার দাদার কাছে যাওয়া হয় না। দাদা বৌদির 10-12 বছরের একটা ছেলে রয়েছে, নাম সুনাল। সুনাল প্রচণ্ড দুষ্টুমি করে, পড়াশোনায় মনই থাকে না তার।
যাই হোক, দাদা বৌদি আর সুনালকে নিয়ে ছিলো ছোট সুখের সংসার। দাদার বিয়ের পরে আমার সেই রকম যাওয়া হয়নি।
বলা বাহুল্য, দাদারা কিন্তু ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকে, নিজস্ব বাড়ি নেই। ভাড়া মাসিক 12,000 টাকা। মোটামুটি বড়ো মাপের ফ্ল্যাট। আপনারা নিশ্চয় ভাবছেন, ফ্ল্যাট নিয়ে এত কিছু কেন বলছি? পড়তে থাকুন, আপনারা নিজেরাই বুঝে যাবেন, সমস্যাটা কোথায়?
একদিন দাদার এক বন্ধু দাদাকে একটা ফ্ল্যাট খোঁজ নেওয়ার কথা বললো। সেই কথাটা দাদা, বৌদিকে জানায়। কারণ দাদা তো সারাক্ষণই ডিউটিতে থাকে। বাড়িতে তেমন থাকে না বললেই চলে। তাই দাদা বৌদিকে কোন ফ্ল্যাটের সন্ধান পেলে জানাতে বললো।
প্রায় মোটামুটি মাস খানেক পর বৌদি কোন একটা ফ্ল্যাটের সন্ধান পেলো। সেই ফ্ল্যাটটা দেখতে বৌদি নিজেই গেলো। কিন্তু ভাগ্যক্রমে বৌদির ওই ফ্ল্যাটটা পছন্দ হয়ে যায় এবং দাদাকে বলে ফ্ল্যাটটা কিনে নিতে। গিয়েছিলো দাদার বন্ধুর জন্য ফ্ল্যাট দেখতে, কিন্তু পছন্দ হয়ে গেলো বৌদির। সাধারণত দাদার বৌদির কোন কথাতেই তেমন একটা নাকচ করে না। তাই দাদাও ওই ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিতে আপত্তি করলো না। নতুন ফ্ল্যাটটা আগের তুলনায় বেশ বড়ো, আর ভা্ড়াও মাত্র 8,000 টাকা। আগের তুলনায় 4,000 টাকা কম। তাই দাদা আর নাকচ করলো না। তাই দাদা বৌদি সুনালকে আগের ফ্ল্যাটটা ছেড়ে নতুন ফ্ল্যাটে চলে গেলো এবং আগের ফ্ল্যাটটা তার বন্ধুকে দিয়ে দিলো।
বৌদিরা নতুন ফ্ল্যাটে যাওয়ার পর আমি একবার গিয়েছিলাম মা বাবাকে সঙ্গে নিয়ে। ওখানে যাওয়ার পর আমার সাথে যা যা ঘটে, আমি আজ পর্যন্ত কারো সাথে শেয়ার করিনি। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পারি সেই ঘটনাগুলোর কবলে সত্যিই আমি পড়েছিলাম।
চলুন মূল ঘটনায় ফেরা যাক।
প্রথমবার যখন ঘরে পা দিয়েছিলাম, হঠাৎ করেই আমার সারা শরীর কেমন যেন ভারি ভারি লাগলো। আমি বিষয়টা তেমন বুঝতে পারিনি। তাই তেমন গুরুত্ব না দিয়ে ঘরে ঢুকে পড়লাম। সেই সময় যে সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটে চলেছিলো, আমি সেই সময় কিছুই বুঝতে পারিনি। তাই আমি কাউকে কিছু বলিওনি। ঘরে ঢোকার পর থেকেই হাত পা তো ভারি ভারি লাগছিলোই, তারই সাথে হঠাৎ করেই আমার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিলো। ভাবলাম, আমার বোধ হয় জ্বর টর এসেছে বোধ হয়। গায়ে হাত দিয়ে দেখলাম। গা তো ঠান্ডায় আছে। তারপরেও এর যুক্তি দিতে গিয়ে ভাবলাম, হয়তো জোড়ে হাওয়া দেওয়ার জন্য শীত করছিলো। কিন্তু এখন বুঝতে পারি, গরমকালে গিয়েছিলাম, ব্যাঙ্গালোরের মতো জায়গায় গরমকালে 11-12টা নাগাদ শীত করবে?
সেই সময় তো কোনকিছুই গুরুত্ব দিলাম না। সন্ধ্যে নামলো। মা বাবা তো অন্য ঘরে বৌদির সাথে গল্প করছে আর সুনাল টিউশন পড়তে গিয়েছে। আমি একা এই ঘরে ফোন নিয়ে ঘাটছিলাম। হঠাৎ করেই লাইটটা কেঁপে উঠলো। ভাবলাম লুজ কানেকশন রয়েছে। কিন্তু বারংবার হতে থাকলে আমি ভয় পেয়ে মা বাবার ঘরে চলে এলাম। আমি কিন্তু ভূতের ভয়ে যাইনি, আমি নিজেও জানি না, সেই সময় কেন ভয় পেয়েছিলাম। আমি তখনও ভাবতে পারিনি যে, ওই বাড়িতে কিছু রয়েছে।
আগেই বলেছি, নতুন ফ্ল্যাটটা অনেক বড়ো। প্রায় 4-5টা রুম রয়েছে। শুধু ডাইনিং রুমই বিশাল বড়ো। আপনারা নিশ্চয় কিছুটা হলেও আন্দাজ করতে পারছেন, কত বড়ো ফ্ল্যাট। রাতে বৌদি আর ভাই একটা ঘরে, মা-বাবা একটা ঘরে আর আমি আর একটা ঘরে শুয়েছি।
হঠাৎ করে মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়, তখন কটা হবে!! দেড়টা-দুটো বোধ হয় হবে তখন। মনে হলো কেউ যেনে আমার ওপাশে কেউ দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর মনে হলো, সে বাইরের দিকে চলে গেলো। আবারও তেমন গুরুত্ব না দিয়ে এটা ওটা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে যখন ঘুম ভাঙলো, তখন একটু ভয় পেয়েছিলাম। ভাবলাম, দরজা তো ভেতর থেকে বন্ধ রয়েছে, তাহলে কাল যে ছিলো, সে বেড়োলো কি করে? ভেতর থেকে বাইরে বেড়োলেও তো অন্তত দরজাটা খোলা থাকবে, কিন্তু দরজা তো বন্ধই রয়েছে।
সারাদিনের আড্ডা ইয়ারকিতে কালকের কথা ভুলেই গেলাম। পরের দিন রাতে তেমন কোন ঘটনা ঘটলো না। তার পরের দিন দুপুরের দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। কিন্তু বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে যখন বৌদিকে একবার গুডবাই জানাতে পিছন ফিরে তাকিয়ে যখন আবার সামনে তাকালাম, হঠাৎ মনে হলো, বৌদির ঠিক পিছনের দরজায় কে যেন উঁকি মেরে আমার দিকে চেয়ে রয়েছে। আবারও যখন পিছন ফিরে তাকালাম, তখন আর কাউকে দেখতে পেলাম না। আমি ভাবলাম, হয়তো এটা আমারই ভুল।
বাড়ি আসার পর দু-তিন ধরে প্রচন্ড জ্বরে ভুগেছিলাম আমি। কোন ডাক্তার বৈদ্যে কাজ হচ্ছিলো না, ঠাকমার কথায় মা আমাকে ওঝার কাছে নিয়ে গেলো। বাবা তো এই সব মানে না। ওঝার থেকে ঝাঁড়ফুক করে আসার পর আমি ঠিক হয়ে গেলাম।
এই ঘটনা তো ঘটেছিলো আমার সাথে। এইসমস্ত ঘটনা ঘটেছিলো প্রায় বছর ছ’য়েক আগে। ততদিনে আমি এই সমস্ত বিষয় ভুলেই গিয়েছিলাম।
গত 17ই জানুয়ারী, 2021 এ, শুনলাম আমার বৌদি স্যুইসাইড করেছে। বাড়ির সকলের মন খারাপ। হওয়ারই কথা!
দাদা বৌদির মধ্যে তেমন ঝগড়া হতো না, সুনালও অনেক শান্ত হয়ে গিয়েছে। সুতরাং স্যুইসাইট করার তো কথা নয়। দাদা সপ্তাহ খানেক পর সুনালকে নিয়ে ব্যাঙ্গালোর থেকে আমাদের বাড়ি এসেছে। এখনও আছে। ধীরে ধীরে দাদার থেকে অনেক ঘটনাই শুনেছি। বৌদি নাকি স্যুইসাইড করার আগে “হনুমান চলিশা” পড়েছিলো। অবাক করা কাণ্ড নয় কি? স্যুইসাইট করার আগে “হনুমান চলিশা”!!
দিনে দিনে দাদার সাথে আরো অনেক বিষয়ে কথাবার্তা চলতে থাকে। জানা যায়, বৌদি নাকি মাঝে মধ্যেই “হনুমান চলিশা” পড়তো। দাদার অনেক আত্মীয় বন্ধু বান্ধবদের বৌদি নাকি বলতো, বৌদির মনে হতো, কেউ যেন বৌদির পিছন পিছন ঘুরে বেড়াতো। কিন্তু কেউ এই সমস্ত বিষয়ে গুরুত্ব দিতো না। দাদাকেও বৌদি জানিয়েছিলো এই ব্যাপারে। দাদাও তেমন গুরুত্ব দেয়নি। কারণ, দাদা তো আর্মিতে চাকরি করে। এইসব ভূত প্রেতের ব্যাপারে দাদার কোন বিশ্বাস নেই।
যাই হোক, দাদা তো বাড়িতে তেমন একটা থাকে না, ভাই টিউশন পড়তে গিয়েছিলো। ভাই টিউশন পড়ে বাড়ি এসে দেখে বাড়ির দরজা খোলা, বৌদি বাড়ি নেই। অনেক খোঁজাখুজির পর ভাই, বৌদিকে খাতের তলায় শুয়ে থাকতে দেখেছিলো। বিকৃত মুখ দেখে ভাই তো খুব ভয় পেয়ে যায়, আর চোখ বন্ধ করে জোড়ে জোড়ে চিৎকার করতে থাকে। হঠাৎ করেই শান্ত গলায় বৌদি নাকি ভাইয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলে উঠলো, “কি রে চিৎকার করছিস কেন? ভয় পেয়েছিস নাকি?”
ভাই তো বৌদিকে বললো যে, “তুমি তো খাটের তলায় শুয়ে ছিলে, বড়ো বড়ো চোখ করে আমার দিকে তাকিয়েছিলে।”
ভাইয়ের কথানুযায়ী, বৌদি নাকি একটু ভয় পেয়েছিলো, কিন্তু ভাইয়ের সামনে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, “ধুর বোকা! আমি তো পাশের ফ্লাটের আন্টির ঘরে গিয়েছিলাম রে।” ভাইকে অনেক রকম শান্তনা দেওয়ার পর ভয়টা কমলো।
এবার আসি বৌদির স্যুইসাইড করার দিন।
সকালবেলার দিকে দাদা ছিলো না, তবে সেদিন বেলার দিকে দাদা বাড়ি আসে। কিন্তু দাদা আসার আগে নাকি বৌদি রান্নাঘরের জানলা বন্ধ করার বহুবার চেষ্টা করে, কিন্তু কিছুতেই বন্ধ করতে পারছিলো না। কিন্তু অন্যান্য দিনগুলোতে জানলা খোলা-বন্ধ ইজিলি করা যায়। তারপর বৌদি ভাইকে ডাকলো জানলাটা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু ভাইও পারলো না। ব্যর্থ হয়ে জানলা খোলায় রেখে দেওয়া হলো।
কিছুক্ষণ পর দাদাও বাড়ি চলে আসে। দাদা ঘরে ঢোকার পর থেকে বৌদি দাদার সাথে কোন কথাও বলেনি। দাদার একটু অন্যরকম লেগেছিলো। দাদার কোন কথার উত্তর সেইভাবে বৌদি দিচ্ছিলো না। হয়তো গুনে গুনে 3-4টে কথার উত্তর বৌদি দিয়েছিলো। দাদা যখন বারংবার প্রশ্ন করেছিলো, বৌদি কেন কথা বলছে না। বৌদি একটা বিরক্তির সুরে বলেছিলো, “তাতে তোমার কি?”
এই কথাটা দাদার প্রচন্ড অদ্ভুত লেগেছিলো। কারণ, বৌদির গলার স্বর মনে হলো যেন সম্পূর্ণ আলাদা। কিন্তু দাদা মনে করলো, হয়তো বৌদির ঠান্ডা লেগেছে হয়তো। তাই গলা বসে গিয়েছে। দাদা দুপুরের দিকে স্নান করে এসে যখন খেতে বসার জন্য বৌদিকে ডাকলো, বৌদিকে কোথাও দেখতে পেলো না। ভাইকে জিজ্ঞেস করলে ভাইও কিছু বলতে পারলো না।
মোটামুটি ঘন্টাখানেক পর বৌদি বাড়ি ফিরে আসে। দাদার প্রশ্নে বৌদি কোন উত্তর দেয়নি। দরজা বন্ধ করে নিজের ঘরে ঢুকে গেলো। মোটামুটি মিনিট দশেক পর বৌদি ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে সকলকে খেতে দিয়ে, নিজেও খেতে শুরু করলো। দাদার কথায়, বৌদিকে নাকি অন্যদিনের তুলনায় অতিরিক্ত সুন্দর লাগছিলো। এমনিতেই বৌদি দেখতে সুন্দর, ফর্সা। তবু সেদিন নাকি, অন্যদিনের তুলনায় অতিরিক্ত সুন্দরী বলে মনে হয়েছিলো দাদার।
বিকেলের পর থেকে বৌদিকে নাকি “হনুমান চলিশা” পড়তে দেখা গিয়েছে। সারাক্ষণই হয় “হনুমান চলিশা” পড়ছে না হলে ইউটিউবে “হনুমান চলিশা” শুনছে। অতিরিক্ত অদ্ভুত লেগেছিলো দাদার। কিন্তু ওই যে বললাম, ভূত-প্রেতেরে ব্যাপারে দাদার কোন বিশ্বাস নেই, তাই ওই ব্যাপারে কোন ভাবনাই মাথাতে আসেনি। এলে হয়তো আজ বৌদি আমাদের সাথেই থাকতো।
যাই হোক, সেদিন রাতে দাদা বৌদি অন্যদিনের মতোই একসাথে ঘুমিয়েছিলো। দাদা সাধারণত ডিউটি থাকলে ভোর চারটেয় উঠে পড়ে রেডি হয়ে পাঁচটার মধ্যে বেড়িয়ে পড়ে। সেদিনও দাদা চারটের সময় উঠে পড়ে, পাশে দেখে বৌদি নেই। ভাবলো হয়তো বার্থরুমে গিয়েছে না হলে হয়তো দাদার জন্য টিফিন রেডি করছে। সাথে সাথে দাদার মনে এলো, বৌদি তো এত সকালে দাদার জন্য টিফিন করতে যাবে না। দাদা তো ক্যান্টিনেই টিফিন করে। তাহলে নিশ্চয় বার্থরুমে গিয়েছে। বার্থরুমে গিয়েও দেখলো বৌদি নেই। তাহলে গেলো কোথায়? ঠাকুরঘরে গিয়ে দেখে, খাটের উপর “হনুমান চলিশা” খোলা রয়েছে, ঠাকুরের দিকে মুখ করে বৌদি ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে।
এই সমস্ত ঘটনা দাদার প্রথমে বিশ্বাস হয়নি। ভেবেছিলো, হয়তো বৌদির কোন দুঃখ ছিলো, যার জন্য সুইসাইড করেছে। কিন্তু ভাইয়ের থেকে কিছু অগোছালো কথা শুনে দাদার মনে খটকা লাগলো। তাই দাদার পর্ববর্তী ভাড়াটেদের ফোন নম্বর জোগাড় করে তাদের সাথে কথা বললো। তাদের সাথে কথা বলে অনেক রকম কথা শোনা গেলো।
কেউ বললো, “ওই বাড়িতে থাকাকালীন নাকি ফ্ল্যাটে অশান্তি লেগেই থাকতো। কোন কাজে সফলতা আসতো না। আবার কেউ বললো, ওখানে নাকি অনেকরকম অলৌকিক ঘটনা ঘটতো। কখনো লাইট দপদপ করতো, না হলে, কোনোরকম হাওয়াবাতাস ছাড়াই প্রচন্ড জোড়ে হাওয়া বয়ে যেতো। অনেকসময় এত ঠান্ডা লাগে যে গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।”
আমি এই সমস্ত ঘটনা জানার পর দাদাকেও আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। দাদাও আজ আমার কথা শুনে আর ওই ফ্ল্যাটের অদ্ভুত ঘটনা শুনে, ভূত প্রেতের প্রতি বিশ্বাস জাগলো। শুধু দাদারই নয়, বাবারও এই সমস্ত বিষয়ে একটু হলেও বিশ্বাস জন্মেছে।
দাদা মাঝে মধ্যেই বলে, আমারই বোঝা উচিত ছিলো, পুরনো ফ্ল্যাটটা ওর থেকে কত ছোটো, তাই ওর ভাড়া 12,000 টাকা আর এই নিউ ফ্ল্যাটটা এত বড়ো হওয়া সত্ত্বেও 8,000 টাকা! এটা নিয়ে আমার ভাবা উচিত ছিলো। আশেপাশের লোকজনের সাথেও কথা বলা উচিত ছিলো।
কিন্তু আর কি করা যাবে! অনেক দেরী হয়ে গেলো....
আসলে আমরা সকলেই কখনো না কখনো অলৌকিক ঘটনার কবলে পড়েছি। হয়তো সেই ঘটনাকে আমরা সেই সময় গুরুত্ব দিই না, বা অনেক সময় ভূত বলে বিশ্বাস করেও ফেলি। যদি গুরুত্ব না দিই, তাহলে তার পিছনে থাকা অনেকরকম যুক্তি খো্ঁজার চেষ্টা করি, আর ভূত বলে যদি বিশ্বাস করেও ফেলি, তাহলেও তা শুধু আমাদের মনের মধ্যেই থেকে যায়। কাউকে প্রকাশ করতে পারি না। কারণ, সবাই তো আর আস্তিক হয় না।
এই ঘটনা লিখতে গিয়ে, এখনও আমার গা শিউরে উঠছে। জানি না, পাঠকদের মনে কি হচ্ছে, কিন্তু আমার যে পুরনো স্মৃতি ভেসে উঠলো, তা শুধু আমিই জানি। আমি ছিলাম একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী, কিন্তু এত কিছু ঘটনার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও গুরুত্ব দিলাম না। আর হারিয়ে ফেললাম আমার প্রিয় বৌদিকে.....
আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন আমাদের সাথে। আপনার ঘটনা লিখে পাঠান যোগাযোগ বক্সের মাধ্যমে।

0 Comments