ওই যুবতী, ইশারায় বিরাটকে কাছে ডাকে। ওই যুবতীকে দেখে বিরাট ভুলে যায়, যক্ষিনী বলে কেউ হতে পারে। বিরাট নিজের সাইকেল ওখানেই রেখে দেয় এবং ধীরে তার দিকে যেতে থাকে।
কাছে গিয়ে যুবতীকে জিজ্ঞেস করে, “কে তুমি? আর এখানে কি করছো? কি নাম তোমার?”
যুবতী রহস্যভরা হাসিমুখ নিয়ে বলে, “নাম নিয়ে কি হবে? যা আছে তা তো কামে আছে।”
“কি ধরনের কাম?” বিরাট অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।
“ওই কাম, যা তুমি ঘরে গিয়ে তোমার স্ত্রীর সাথে করতে চলেছো। তুমি তো তোমার স্ত্রীকে সারা রাত জাগাতে চেয়েছিলে না? আমাকে তুমি জাগাবে না?”
ওই যুবতীর শরীরে যেন একপ্রকার নেশা জুড়ে রয়েছে। যাকে দেখে বিরাট সমস্ত কিছু ভুলে গেলো। তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো, সে যেন বশ হয়ে গিয়েছে যুবতীটির প্রতি। বিরাট বলে,“হ্যাঁ। কেন নয়। শুধু আজ কেন, কাল, পরশু, টরশু প্রতিদিন জাগিয়ে রাখবো। কোনোদিন ঘুমাতে দেবো না তোমাকে।” এই বলে বিরাট যুবতীকে নিজের কাছে টেনে এনে জড়িয়ে ধরলো।
কিছুক্ষণের পরেই তারা উভয়েই বালির উপর নির্বস্ত্র হয়ে শুয়ে থাকে। তাদের উভয়ের উষ্ণস্পর্শে বালি তাদের গায়ে লেপে যায়। ওই যুবতীর গা থেকে চামেলী ফুলের গন্ধ নির্গত হতে থাকে। যুবতী নিচে এবং বিরাট উপরে।
বিরাটের কপাল থেকে ঘাম নির্গত হতে থাকে। তাকে দেখে পরিষ্কার বোঝা যায়, সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু যুবতীকে দেখে মনে হচ্ছে, তার কিছু মনেই হয়নি।
তার শরীরের তৃষ্ণা তখনও মেটেনি। বিরাট ক্লান্ত হয়ে যুবতীর উপরে পড়তে যাচ্ছিলো, ঠিক তখনই তার চোখ যুবতীর বুকের উপর পড়ে। যেখানে সে দেখতে পায়, যুবতীর বুকের উপর ধীরে ধীরে রক্তের আঁচর পড়ছে এবং তার পা থেকে শিরা উন্মুক্ত হতে চলেছে। যুবতীর চুল ধীরে ধীরে সাদা বর্ণ ধারণ করলো।
দেখতে দেখতে ওই যুবতী এবং বৃদ্ধায় রূপান্তরিত হলো। এই দেখে বিরাটের চোখ ভয়ে ভীতগ্রস্ত হয়ে যায়। হঠাৎ করেই তার শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। বিরাট কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠলো, “কে তুমি?”
ওই যুবতী ধীর কণ্ঠে বলে, “আমি যক্ষিনী। তোর মৃত্যু।” যা শুনে বিরাটের রোম খারা হয়ে যায়।
হঠাৎ করেই ওই বৃদ্ধাকে দুরে সড়িয়ে দেয়। ঠিক তখনই যক্ষিনী তাকে চেপে আঁকড়ে ধরে। আর বলে, “কোথায় যাচ্ছো প্রিয়? আমার তৃষ্ণা এখনো মেটেনি। তুমি তো আমাকে কাল, পরশু, টরশু প্রতিদিন আমাকে জাগিয়ে রাখবে। এখন কি হলো? ক্লান্ত হয়ে পড়লে নাকি ভয় পেয়ে গেলে? আমি এখন তোমার রক্ত খাবো।” এই বলে সে হাসতে থাকে।
বিরাট তার রূপ দেখে এতটাই ভয় পেয়ে যায় যে, কিছুই বলতে পারছিলো না। যক্ষিনীর চোখে নিজের মৃত্যু দেখতে পাচ্ছিলো।
যক্ষিনী ভয়ংকর গলায় বলতে লাগলো, “শালা জানোয়ার, তোর কামনা এতটাই বেড়ে গেছিলো যে, তুই ভুলেই গেছিলি যে তোর বৌ বন্দনা তোর জন্য অপেক্ষা করছে। আর তুই আমার সাথে…… তোরা পুরুষ মানুষ কখনো এক স্ত্রীতে খুশি থাকতে পারিস না। তোদের কামনা কোনোদিন শেষ হবে না।”
এই বলে যক্ষিনী বিরাটের বুকের উপর হাত বসিয়ে দেয়। বড়ো বড়ো কালো তীক্ষ্ন নখের দ্বারা কাটতে থাকে।
বিরাট কাকুতি মিনতি করে বলতে থাকে, “আমাকে প্লিজ ছেড়ে দাও। এই রকম করো না। আমাকে যেতে দাও।”
“তোকে ছেড়ে দেবো? অবশ্যই ছেড়ে দেবো।” এই বলে যক্ষিনী বিরাটের বুকের ভিতর তীক্ষ নখ ঢুকিয়ে দেয় এবং ধীরে ধীরে তার পুরো হাত বুকের ভিতর ঢুকিয়ে দেয়। আর তখনই ঘন কালো মেঘ পুরো আকাশ ঢেকে দেয় এবং জোড় বৃষ্টি পড়া শুরু করে।
নখের দ্বারা, বিরাটের সমস্ত রক্ত যক্ষিণী শুষে নিতে থাকে। ধীরে ধীরে যত রক্ত তার শরীরে ঢুকতে লাগলো, ততই সে যুবতীতে রূপান্তরিত হতে লাগলো। যক্ষিনী ধীরে ধীরে পুনরায় যুবতীতে রূপান্তরিত হয়ে যায় এবং বিরাটের শরীরে সাদা ধবধবে শরীরে রূপান্তরিত হয়ে যায়। তার শরীরে রক্তের এক বিন্দুও ছিলো না। কিন্তু তখনও তার হার্টবিট চলছিলো।
যক্ষিনী তার কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলতে থাকে, “রামলু রামলু রামলু….” এই বলে যক্ষিনী তার হাত বিরাটের বুক থেকে বের করে ফেলে। যক্ষিনী যেই নিজের হাত বের করলো, বিরাট তৎক্ষণাৎ মারা যায়। কারণ, যক্ষিণীর হাতে বিরাটের হার্ট ছিলো। যা শরীর থেকে বের করে নেয়। এরপরেই যক্ষিণী উধাও হয়ে যায়।
কোথায় গেলো যক্ষিনী? কে এই যক্ষিনী? যক্ষিনীর আসল পরিচয় কি? পরবর্তী পর্বের জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন।

0 Comments