জগদীশ লেখককে জিজ্ঞেস করলো, কি অভিশাপ ছিলো স্যার? বলুন না স্যার।

লেখক বলে, “ওটা জানতে হলে যক্ষিনীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের জন্য wait করতে হবে।”

জগদীশ বললো, “মনে হচ্ছে এই বইটা দারুণ hit করবে। আমি খুব excited বই পাবলিসিং’এর জন্য।”


লেখক বললো, “হিট তো করবেই জগদীশ। কারণ এর সাথে আমার কষ্টও লুকিয়ে রয়েছে। তবে যাই হোক, একটা কথা মনে রেখো কেউ খারাপ হয় না, তাকে খারাপ করে দেওয়া হয়।”


“তাহলে যক্ষিণী খারাপ ছিলো না বলুন? তাহলে ওকে খারাপ করে দেওয়া হয়েছিলো!”


“আমি বললাম না আর কোনো কথার উত্তর দেবো না। যা জানার দ্বিতীয় অধ্যায় থেকে জানবে।”


কথা বলতে বলতে লেখকের সিগারেট প্রায় শেষের দিকে ছিলো। আর কটা টান বাকি ছিলো। 


জগদীশ কাঁপতে কাঁপতে বললো, “স্যার একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?”


লেখক হাসিমুখে বললো, “তোমার হজম হচ্ছে না বলো? ঠিক আছে বলো।”


“স্যার আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে আপনি যক্ষিনীকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। আপনি কি কখনো যক্ষিণীকে দেখেছেন?”


জগদীশের কথা শুনে লেখক একদম চুপ হয়ে যায়। লেখকের মুখ দেখে মনে হচ্ছিলো, সে বোধ হয় কোনো এক চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে গিয়েছে। আর তার এমন কিছু মনে পড়ে গিয়েছে যা জগদীশকে বলতে চাইছিলো না। 


জগদীশ লেখকের উপর চাপ সৃষ্টি করে প্রশ্ন করে, “কি হলো স্যার? আপনি চুপ করে গেলেন যে? আপনি কি যক্ষিণীকে দেখেছেন?”


লেখক শান্ত গলায় বললো, “যক্ষিণী আমার সামনে নয়। আমি নিজে যক্ষিনীর সাথে…” লেখকের এইটুকুই বলার সাথে সাথে ফোন কাট হয়ে যায়। 


লেখক মনে মনেই বললো, “এ আবার কি হলো? ফোন কেটে গেলো কি করে? আবার মনে হয়ে নেটওয়ার্ক চলে গেছে। গ্রামে এই এক সমস্যা কখন নেটওয়ার্ক থাকে আর কখন নেটওয়ার্ক চলে যায়।” এই বলে লেখক চেয়ারের পাশে রাখা লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। 


লেখকের একটা পা ল্যাংরা ছিলো। এক পায়ে ঠিক করে চলতে পারতো না। তাই সে লেংরিয়ে লেংরিয়ে চলতো। লেখক কেবল এক দু পা’ই হেঁটেছে, ঘরের লাইট on off হতে শুরু করে। 


লেখক বাল্বের দিকে তাকিয়ে বলে, “আরে লাইটের আবার কি হলো?” এইটুকু ভাবার সাথে সাথেই লাইট পুরোপুরি অফ হয়ে যায়। যার ফলে চারপাশে অন্ধকার নেমে পড়ে। 


এতটাই অন্ধকার যে, লেখকের হাত পা’ই দেখা যাচ্ছিলো না।


“আজ কি হলো? সে তো আবার ফিরে আসেনি? না…না এমন হতে পারে না। সে আসতে পারে না।” লেখকের এইটুকু ভাবার সাথে সাথেই ঘরের দরজা নিজে থেকেই খুলে যায়। ঘরের বাইরে থেকে হালকা সাদা আলো দেখা যাচ্ছিলো। সেই দেখে লেখক লাঠির সাহায্যে দরজার দিকে এগোতে থাকে। 


হঠাৎ কেউ যেন তার পা চেপে ধরে। যার ফলে সে মাটিতে ধরাম করে পড়ে যায়। “আঃ আঃ আমার পা!” লেখক ধীরে ধীরে নিজের পায়ের দিকে তাকায়। চারপাশে এত অন্ধকার যে কিছুই দেখা যাচ্ছিলো না।


লেখক হাতটাকে যখন পায়ের উপর রাখতে যায়, তখন তার মনে হলো, তার হাত অন্য কারো হাতের উপর রয়েছে। 


লেখক ভীতগ্রস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে সে হাত সড়িয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পর তার মনে হলো, তার পা আর কেউ ধরে রাখেনি। তাই সে আর দেরী না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেঝেতে শুয়ে ল্যাংড়াতে ল্যাংড়াতে দরজার দিকে এগোতে লাগলো। লেখক প্রায় দরজার দিকে পৌঁছায়, দরজা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। 


কিছুক্ষণ পর দরজার ওপার থেকে লেখকের চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়। “আ……আ….আ……” ধীরে ধীরে লেখকে ভয়ার্ত শব্দ শুনতে পাওয়া গেলো, “কে তুমি?”


এক হিংস্র মহিলা কণ্ঠ ভেসে এলো, “আমি যক্ষিণী, তোর মৃত্যু।” এরপরেই ভয়ংকর হাসির শব্দ শোনা গেলো।


তারপরেই লেখকের ভয়ার্ত চিৎকার শুনতে পাওয়া গেলো, “আ……..”। এতটাই ভয়ার্ত চিৎকার যে, যা শুনলে রোম খাড়া হয়ে যাবে।


কিছুক্ষণ পরেই, দরজার তলা দিয়ে রক্ত গড়িয়ে এলো। 


তারপর,

13 বছর পর সমস্ত ঘটনা পার করে এক নতুন ঘটনার সূচনা হলো…..


যক্ষিণী - তৃতীয় পর্ব | Yakshini - 3rd Part